ঝাড়গ্রাম জেলার বিবেকানন্দ শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়। এই কলেজের গভর্নিং বডির প্রেসিডেন্ট তথা বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা প্রিন্সিপাল উমা ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম এবং নিয়মবহির্ভূত কাজ করার অভিযোগ তুলেছেন। এমনকী এই অভিযোগ তুলে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে চিঠি লিখেছেন বনমন্ত্রী। এই চিঠির খবর প্রকাশ্যে আসতেই তুমুল চর্চা শুরু হয়েছে। এখন কলেজ পরিচালনা নিয়ে চরম অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে বলে খবর। এই কলেজের হস্টেলে এসে থাকছেন ৮ জন তরুণী বলে অভিযোগ। কিন্তু তাঁদের কাছে কোনও অনুমতি নেই বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা।
এদিকে ২৬ হাজার চাকরি বাতিল হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে। তা নিয়ে এখন সরগরম রাজ্য–রাজনীতি। তার মধ্যেই এমন অভিযোগ ওঠায় উত্তেজনার পারদ উর্দ্ধমুখী হয়ে গিয়েছে। বীরবাহা চিঠিতে শিক্ষামন্ত্রীকে জানিয়েছেন, ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়ার বিবেকানন্দ শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়ের কলেজ হস্টেলে ৮ জন তরুণী থাকছেন। অথচ এই বিষয়ে গভর্নিং বডির কোনও অনুমতিই নেওয়া হয়নি। সবাইকে অন্ধকারে রেখে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর এটা কলেজ প্রিন্সিপালের অঙ্গুলিহেলনেই হয়েছে বলে বনমন্ত্রীর অভিযোগ। বীরবাহা হাঁসদার অভিযোগ, এই ঘটনায় শুধু কলেজের নিয়মই ভেঙেছে তাই নয়, বরং সব পড়ুয়াদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘কী করতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন’, ৭ তারিখ বড় কিছু ঘটতে পারে ইঙ্গিত কুণালের
অন্যদিকে ন্যাক–এর মূল্যায়ন অনুযায়ী, এই কলেজ বি প্লাস গ্ৰেড পায়। এই কলেজ পরিদর্শন করার সময় খরচের জন্য গভর্নিং ১৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে। প্রিন্সিপালের পক্ষ থেকে কিন্তু গভর্নিং বডিকে জানানো হয়, ৩০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। অনুমোদন ছাড়াই একেবারে দ্বিগুণ খরচ নিয়ে গভর্নিং বডিতে প্রশ্ন উঠে যায়। গভর্নিং বডির পক্ষ থেকে অনুমোদন ছাড়া এই আর্থিক খরচ করা নিয়ে প্রিন্সিপালকে শোকজ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তার সঙ্গে কলেজ ছাত্রীদের হস্টেলে থাকা অনুমোদন দিয়েছেন তিনিই বলে অভিযোগ বনমন্ত্রীর।
এছাড়া শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে লেখা চিঠিতে বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার অভিযোগ, এই ৮ জন তরুণী সম্পর্কে কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনও তথ্যই জানায়নি। তাঁদের পরিবারের কোনও তথ্য পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। এমন কাজের জন্য শিক্ষামন্ত্রী যেন কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির পদক্ষেপ করেন। বনমন্ত্রীর দাবি, তদন্ত কমিটি গঠন করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হোক। এই গোটা বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা বলেন, ‘ন্যাক প্রতিনিধিদলের পরিদর্শন করার সময় কলেজের গভর্নিং বডির পক্ষ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। প্রিন্সিপাল বোর্ডকে ৩০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছেন। দ্বিগুণ খরচের কোনও সদুত্তর মেলেনি। তাই প্রিন্সিপালকে শোকজ নোটিশ ধরানো হয়। গভর্নিং বডির অনুমোদন ছাড়াই তিনি কলেজ ছাত্রীদের হস্টেলে থাকার অনুমোদন দিয়েছেন। সুরক্ষা নিয়ে প্রিন্সিপালের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, দু’জন মহিলা নিরাপত্তারক্ষী আছে। তাই শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানিয়েছি।’