গ্যাস বেলুন ফোলানোর (হিলিয়াম গ্যাস) সিলিন্ডার ফেটে প্রাণ গেল ২২ বছরের এক তরুণীর। ঘটনায় গুরুতর জখম হলেন আরও বেশ কয়েকজন। তাঁদের মধ্যে বেলুন বিক্রেতা ও তাঁর ভাইও রয়েছেন। রবিবার ভোর রাতে (রাত ১২টা ৩০ মিনিট নাগাদ) ঘটনাটি ঘটে নদিয়ার কল্যাণীতে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত তরুণীর নাম মুসকান মণ্ডল। তিনিও আর পাঁচজনের মতোই মেলায় ঘুরতে গিয়েছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান ও পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত থেকে জানা গিয়েছে, কল্যাণীর সগুনা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোড়াগাছায় এই মেলা বসেছিল। সেই মেলাতেই গ্যাস বেলুন বিক্রির স্টল দিয়েছিলেন শরিফুল মণ্ডল।
শনিবার রাত বাড়তেই মেলার ভিড় কমতে শুরু হয়। তবে, তখনও অনেকে মেলার মাঠে ইতিউতি ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ - মুসকান মণ্ডল সেই সময় দাঁড়িয়ে ছিলেন শরিফুলের বেলুনের স্টলের সামনেই। হঠাৎই এক বিকট আওয়াজে কার্যত কেঁপে ওঠে মেলার মাঠ!
ঘটনার আকস্মিকতা খুব স্বাভাবিকভাবেই হইচই শুরু হয়ে যায়। কয়েক মুহূর্ত কাটতেই দেখা যায়, গ্যাস বেলুনের স্টলের সিলিন্ডার ফেটে গিয়েছে। বিস্ফোরণ ঘটেছে সেখানেই। আর তার আশপাশে রক্তাক্ত ও দগ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছেন বেশ কয়েকজন। তাঁদের মধ্যে মুসকান ও শরিফুল ছাড়াও ছিলেন শরিফুলের ভাই রফিকুল মণ্ডল।
সঙ্গে সঙ্গে আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে পৌঁছানোর পর চিকিৎসকরা মুসকানকে মৃত ঘোষণা করেন। জানা যায়, বেলুন বিক্রেতা শরিফুলের আঘাতও অত্যন্ত গুরুতর। তাঁর ভাই রফিকুলও ভালো মতোই জখম হয়েছেন। পরবর্তীতে তাঁদের মধ্যে একজনকে কল্যাণী এইমস এবং অন্যজনকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে রেফার করা হয় বলে দাবি সূত্রের।
এই ঘটনায় মেলার নিরাপত্তাব্যবস্থা ও নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সূত্রের দাবি, এই ঘটনায় আরও কয়েকজন আহত হয়ে থাকতে পারেন। তবে, নির্ভরযোগ্য সূত্র মারফত তার সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
অন্যদিকে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মেলায় আগে থেকেই তাদের তরফে পাহারার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। ঘটনার সময়েও পুলিশকর্মীরা মেলাস্থলে ছিলেন। আহতদের দ্রুততার সঙ্গে হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তারপরও একজনকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, এটা আসলে দুর্ঘটনা। খুব সম্ভবত দু'টি কারণে গ্যাস বেলুন ফোলানোর সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে। প্রথমত - সিলিন্ডার 'লিক' করে বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে। এবং দ্বিতীয়ত - কোনও সিলিন্ডারের ভিতর গ্যাসের চাপ বেড়ে গেলেও এমনটা ঘটে থাকতে পারে। তবে, ঠিক কী ঘটেছিল, তা জানতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পাশাপাশি, এই প্রাণঘাতী অঘটনের পর মেলা বন্ধও করে দেওয়া হয়েছে।