গণধর্ষণের শিকার হয়ে নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন আইনের এক ছাত্রী। কিন্তু, তাঁর বাবা তাঁকে এই চরম সিদ্ধান্ত নিতে দেননি। ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঁচিয়েছেন আত্মজাকে। এবার সেই ঘটনায় অভিযুক্ত চারজনকে পাকড়াও করল পুলিশ। পাঠানো হল শ্রীঘরে।
সূত্রের দাবি, ওই তরুণীকে যে চারজন গণধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে, তাদের মধ্যে একজন মেয়েটির প্রেমিক! চলতি বছরের প্রথম দিকে এই ঘটনাটি ঘটে অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমে।
অভিযোগ, কেবলমাত্র ওই তরুণীর উপর পৈশাচিক অত্যাচার চালিয়েই ক্ষান্ত হয়নি অভিযুক্তরা। এমনকী, তারা নিয়মিত তরুণীকে নানাভাবে ভয়ও দেখাতে শুরু করে।
অভিযুক্তরা গণধর্ষণের ভিডিয়ো ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে মেয়েটিকে সমানে ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করে দাবি। সেই কারণেই ওই তরুণী আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু, তাঁর বাবা তাঁকে বাঁচাতে সক্ষম হন।
ইতিমধ্যেই চার অভিযুক্তকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস)-এর ৭০(১), ৭৭, ৩৫১(২), ৬৯ এবং ৭৫(১) নম্বর ধারার পাশাপাশি ২০০০-২০০৮ সালের তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৭(এ) ধারাতেও মামলা রুজু করা হয়েছে।
বিশাখাপত্তনমের পুলিশ কমিশনার শঙ্খব্রত বাগচী জানিয়েছেন, ধৃতদের মধ্যে রয়েছে নিগৃহীতার প্রেমিক বামসি ও তার তিন বন্ধু।
পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, বামসির সঙ্গে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সম্পর্কে ছিলেন ওই তরুণী। ২০২৪ সালের ১৩ অগস্ট বামসিই ওই তরুণীকে বিশাখাপত্তমের কৃষ্ণনগরে, তার বন্ধুদের ঘরে নিয়ে যায়। এবং তারপর সেখানেই ওই তরুণীর উপর যৌন অত্যাচার করা হয়।
প্রথমে বামসি ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে। সেই ঘটনার ভিডিয়ো রেকর্ড করে বামসিরই এক বন্ধু! এরপর ওই ভিডিয়ো ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তরুণীকে লাগাতার ব্ল্যাকমেল করা শুরু হয়। এমনকী, পরবর্তীতে বামসির বন্ধুরাও একইভাবে তরুণীর উপর অত্যাচার করে।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এই প্রেক্ষাপটে গত ১৮ নভেম্বর আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই তরুণী। কিন্তু, তাঁর বাবা তাঁকে মরতে দেননি। তরুণীর তাঁর সঙ্গে ঘটনা সমস্ত ঘটনা পরিবারের সদস্যদের জানান।
তরুণী ও তাঁর পরিবারের তরফে পুলিশের কাছে গণধর্ষণ, হুমকি ও ব্ল্যাকমেলিংয়ের অভিযোগ দায়ের করা হয়। তারই ভিত্তিতে মঙ্গলবার চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ধৃতদের গ্রেফতার করার পর তাদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করবে পুলিশ। এই জঘন্য অপরাধ কেন তারা করল, পূর্ব পরিকল্পনা করে এসব করা হয়েছে কিনা, সেসব জানার চেষ্টা করা হবে।
আইন অনুসারে যা যা করার, তা করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। ঘটনার নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।