কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর) তাঁকে সম্মান দেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। আর সেই শ্রেয়স আইয়ারই ১১ বছর পরে পঞ্জাব কিংসকে আইপিএলের ফাইনালে তুললেন। রবিবার আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে দুর্দান্ত ইনিংস খেলে প্রীতি জিন্টাদের দলকে ফাইনালে পৌঁছে দিলেন। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ২০৪ রান তাড়া করতে নেমে ৪১ বলে অপরাজিত ৮৭ রানের দুর্ধর্ষ ইনিংস খেলেন। আর একেবারে রাজকীয় কায়দায় ছক্কা মেরে ২০১৪ সালের পরে প্রীতি জিন্টার দলকে ফাইনালে তুললেন। পাঁচ উইকেটে জেতান পঞ্জাবকে।
অধিনায়ক হিসেবে ইতিহাস শ্রেয়সের
সেইসঙ্গে অধিনায়ক হিসেবে ইতিহাস গড়ে ফেললেন শ্রেয়স। প্রথম অধিনায়ক হিসেবে তিনটি দলকে আইপিএলের ফাইনালে তুললেন। ২০২০ সালে দিল্লি ক্যাপিটালস, ২০২৪ সালে কেকেআর এবং ২০২৫ সালে পঞ্জাবকে আইপিএলের ফাইনালে তুললেন শ্রেয়স। শুধু তাই নয়, মহেন্দ্র সিং ধোনি এবং রোহিত শর্মার পরে তৃতীয় অধিনায়ক হিসেবে পরপর দু'বার দলকে আইপিএলের ফাইনালে তুললেন।
তবে শেষপর্যন্ত ২০২৪ সালের মতো শ্রেয়স আইপিএল ট্রফি জিততে পারবেন কিনা, তা নির্ধারিত হবে মঙ্গলবার। যেদিন নয়া চ্যাম্পিয়ন পাবে আইপিএল। ফাইনালে ওঠা বিরাট কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি) বা পঞ্জাব কখনও আইপিএল জেতেনি। অবশেষে সেই খরা কাটতে চলেছে কোনও একটা দলের।
শ্রেয়স ও নেহালের যুগলবন্দীতে জয় পঞ্জাবের
যদিও একটা সময় মনে হয়েছিল যে পঞ্জাবের ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন অধরা থেকে যাবে। বিশেষত জোশ ইংলিস তো জসপ্রীত বুমরাহকে পর্যন্ত বেধড়ক মারেন। কিন্তু ২১ বলে ৩৮ রান করে তিনি আউট হয়ে যাওয়ার পঞ্জাব কিছুটা চাপে পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু মুম্বইয়ের বাজে ফিল্ডিংয়ের সুবাদে জীবনদান পেয়ে নেহাল ওয়াধেরা ছন্দে চলে আসেন। যোগ্যসংগত করেন শ্রেয়স। ২৯ বলে ৪৮ রান করে নেহাল আউট হয়ে গেলেও ম্যাচটা শেষ করে আসেন আসেন পঞ্জাব অধিনায়ক। হাঁকান আটটি ছক্কা। ব্যাট থেকে আসে পাঁচটি চারও।
মুম্বইয়ের ব্যাটিং ইনিংস, ২২০-২৩০ রান তোলার জায়গায় ছিল
রবিবার প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ছয় উইকেটে ২০৩ রান তোলে মুম্বই। বৃষ্টির জন্য নির্ধারিত সময়ের প্রায় আড়াই ঘণ্টা পরে খেলা শুরু হতে মুম্বইয়ের প্রথম উইকেট তুলতে বেশিক্ষণ সময় লাগেনি পঞ্জাবের। তৃতীয় ওভারেই ড্রেসিংরুমে ফিরে যান এলিমিনেটরের নায়ক রোহিত শর্মা (সাত বলে আট রান)। তারপর তিলক বর্মার সঙ্গে জুটি বেঁধে দ্রুত রান তুলতে থাকেন জনি বেয়ারস্টো। দ্বিতীয় উইকেটে তাঁরা ৩.৪ ওভারে ৫১ রান যুক্ত করেন।
আরও পড়ুন: মাথা পুরো খেয়ে নেবে! আরসিবি আইপিএল জিততে পারে ভেবেই আঁতকে উঠছেন ২ প্রাক্তন তারকা
সপ্তম ওভারের শেষ বলে ৩৮ রানে (২৪ রান) বেয়ারস্টো আউট হয়ে যাওয়ার পরে মুম্বইয়ের ইনিংসের হাল ধরেন তিলক এবং সূর্যকুমার। তাঁরা সেই রানের গতিটা বজায় রাখেন। একটা সময় মনে হচ্ছিল যে ২২০-২৩০ রান তুলে ফেলবে মুম্বই। কিন্তু ১৩.৫ ওভার থেকে ১৪.১ ওভারের মধ্যে তিলক এবং সূর্যকে হারিয়ে কিছুটা খেই হারিয়ে ফেলেন হার্দিকরা। ২৯ বলে ৪৪ রান করেন তিলক। ২৬ বলে সমসংখ্যক রান আসে সূর্যের ব্যাট থেকে।
শেষপর্যন্ত ১৮ বলে নমন ধীরের ৩৭ রানের সুবাদে ২০০ রানের গণ্ডি পেরিয়ে যায় মুম্বই। ১৮ তম ওভারের শেষ বলে হার্দিক ১৩ বলে ১৫ রান আউট না হয়ে গেলে রানটা ২২০-র কাছাকাছি চলে যেত। তবে মুম্বই যে ২০০ রানের গণ্ডিও পার করেছে, সেটার জন্য নিজেদের দোষ দিতে পারে পঞ্জাব। কারণ বাজে ফিল্ডিং এবং নিয়ন্ত্রণহীন বোলিংয়ের সুবাদে লাগাতার চাপ তৈরি করতে পারেনি। কিন্তু এখন আর সেইসব নিয়ে মাথা ঘামাবে না পঞ্জাব।