শনিবার অপারেশন সিঁদুরের বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহান। ৭ মে অপারেশন সিঁদুরের অধীনে শুরু হওয়াসংঘর্ষের সময় ভারতের সামরিক অভিযানের বিশদ বিবরণ দিয়েছেন তিনি। হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে।
'পরমাণু উত্তেজনা চোখে পড়ছে না',
ভারত ও পাকিস্তান পরমাণু সংঘাতের কাছাকাছি পৌঁছেছে বলে যে দাবি করা হচ্ছে, তা নাকচ করে দিয়েছেন সিডিএস অনিল চৌহান
সিঙ্গাপুরে শাংগ্রি-লা সংলাপের ফাঁকে ব্লুমবার্গ টিভিকে জেনারেল বলেন, 'আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যে প্রচলিত অপারেশন পরিচালনা এবং পারমাণবিক সীমার মধ্যে অনেক দূরত্ব রয়েছে।
তিনি আরও বিশদ বিবরণ দিয়েছেন যে সংঘর্ষের সময় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যোগাযোগের চ্যানেলগুলি ‘সর্বদা খোলা ছিল’ এবং বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য উভয় পক্ষের পারমাণবিক স্তরের নীচে আরও বিকল্প রয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অতীত দাবি যে তিনি পরমাণু যুদ্ধ ঠেকাতে সাহায্য করেছেন, সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে জেনারেল চৌহান জবাব দেন যে ভারত বা পাকিস্তান উভয়ই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কাছাকাছি পৌঁছেছে তা বিশ্বাস করা ‘দূরভিসন্ধিমূলক’।
ভারতের ছয়টি যুদ্ধবিমান নামিয়ে ফেলেছিল পাকিস্তান এমন দাবির জবাবে তিনি বলেন, এটা একেবারেই ভুল।
তিনি বলেন, 'বিমান ভূপতিত হচ্ছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, গুরুত্বপূর্ণ হলো কেন সেগুলো ভূপাতিত করা হচ্ছে। কী ভুল করা হয়েছে- সেগুলো গুরুত্বপূর্ণ। সংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ নয়।
সিডিএস জেনারেল চৌহান ব্যাখ্যা করেছেন যে ভারত তার ভুল থেকে দ্রুত শিখেছে। ভালো দিক হলো, আমরা যে ট্যাকটিক্যাল ভুলটা করেছি সেটা বুঝতে পেরেছি, এর প্রতিকার করতে পেরেছি।
'আমরা কৌশল সংশোধন করি এবং তারপর ৭, ৮ ও ১০ তারিখে বিপুল সংখ্যায় পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বিমান ঘাঁটিতে আঘাত হানি, দায়মুক্তির সঙ্গে তাদের সব আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে নিখুঁতভাবে হামলা চালাই।
'পাক ভূখণ্ডের ৩০০ কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে পড়েছিল'
সংঘর্ষের সময় সামরিক অভিযানের বিষয়ে চৌহান বলেন, ভারত দেশীয় অস্ত্র এবং বিদেশী প্ল্যাটফর্ম উভয়ের উপরই নির্ভর করে। তিনি পাকিস্তানের ভূখণ্ডের গভীরে লক্ষ্যবস্তুতে ভারতীয় বাহিনীর আঘাত হানার সক্ষমতার কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা পাকিস্তানের ভেতরে ৩০০ কিলোমিটার পর্যন্ত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করতে সক্ষম হয়েছি সুনির্দিষ্টভাবে এবং লক্ষ্যবস্তু, বিমানক্ষেত্র ও পরিকাঠামোর দিক থেকে। এটি সরঞ্জামগুলির কার্যকারিতা নির্দেশ করে,’সিডিএসকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে পিটিআই।
তার মতে, বর্তমান যুদ্ধবিরতি বহাল থাকলেও তার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে পাকিস্তানের পদক্ষেপের ওপর। তিনি বলেন, 'আমরা স্পষ্ট রেড লাইন রেখেছি।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন অসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় ৭ মে ভোরে অপারেশন সিঁদুর শুরু করে ভারত।
পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জঙ্গি পরিকাঠামো লক্ষ্য করে এই অভিযান। রিপোর্ট অনুযায়ী, এই হামলার ফলে ১০০ জনেরও বেশি জঙ্গি নিহত হয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে পাকিস্তানের পরিচিত জঙ্গি কেন্দ্র বাহাওয়ালপুরে।