হিংসা কবলিত মুর্শিদাবাদে গতকাল রাতেই পৌঁছে যান এডিজি সিদ্ধি নাথ গুপ্তা, বিনীত গোয়েলরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিএসএফের পাশাপাশি পুলিশ সারা রাত টহল দেয় ধুলিয়ান-সুতি, জঙ্গিপুর, সামশেরগঞ্জ এলাকায়। এরই মাঝে জানা দিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ওয়াকফ হিংসায় জড়িত থাকা সন্দেহে অন্তত ১৩৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে স্থানীয়রা পুলিশের ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না বলে অভিযোগ। এই আবহে অনেকেই এলাকা ছেড়েছেন বলে দাবি বিজেপির। এরই মাঝে পুলিশের ডিজির সঙ্গে বৈঠক করেন বিএসএফ দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের আইজি। এদিকে এই ওয়াকফ হিংসার জেরে হেনস্থার শিকার হন জঙ্গিপুরের তৃণমূলের সাংসদ খলিলুর রহমান, ফারাক্কার তৃণমূল বিধায়ক মনিরুল ইসলামরাও। (আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান থেকে গঙ্গা পার করে পালাচ্ছেন আতঙ্কিতরা, দাবি বিজেপির)
আরও পড়ুন: পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের DG-র সঙ্গে গভীর রাতে সাক্ষাৎ BSF কর্তার, বৈঠক শেষে সাফ বললেন…
এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং ডিজি রাজীব কুমারের সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব। সেই বৈঠকে রাজ্যের ডিজিপি জানান, ধুলিয়ান-সহ আশপাশের এলাকায় এখনও চারা উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব জানান, মুর্শিদাবাদে আগে থেকেই মোতায়েন ছিলেন ৩ কোম্পানি বিএসএফ জওয়ান। আরও পাঁচ কোম্পানি জওয়ন মোতায়েন করা হবে জেলায়। এই আবহে সব মিলিয়ে ৮০০ জনের কাছাকাছি বিএসএফ জওয়ান মোতায়েন থাকবেন জেলায়। (আরও পড়ুন: 'আমাদের বাঁচান', ওয়াকফ হিংসার আবহে BSF-এর সামনে হাতজোড় আবেদন সামশেরগঞ্জের)
আরও পড়ুন: সিএএ হতে দেবেন না বললেও তা কার্যকর বাংলায়, এবার ওয়াকফে 'না' মমতার, জবাবে BJP বলল...
এদিকে রাজ্যে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে মমতা এক দীর্ঘ পোস্ট করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাতে তিনি লিখেছিলেন, 'সব ধর্মের সকল মানুষের কাছে আমার একান্ত আবেদন, আপনারা দয়া করে শান্ত থাকুন, সংযত থাকুন। ধর্মের নামে কোনো অ-ধার্মিক আচরণ করবেন না। প্রত্যেক মানুষের প্রাণই মূল্যবান, রাজনীতির স্বার্থে দাঙ্গা লাগাবেন না। দাঙ্গা যারা করছেন তারা সমাজের ক্ষতি করছেন। মনে রাখবেন, যে আইনের বিরুদ্ধে অনেকে উত্তেজিত, সেই আইনটি কিন্তু আমরা করিনি। আইনটি কেন্দ্রীয় সরকার করেছে। তাই উত্তর যা চাওয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চাইতে হবে। আমরা এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য সুস্পষ্টভাবে বলেছি - আমরা এই আইনকে সমর্থন করিনা। এই আইন আমাদের রাজ্যে লাগুও হবে না। তাহলে দাঙ্গা কীসের? আরো মনে রাখবেন, দাঙ্গায় যারা উস্কানি দিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা আমরা নেবো। কোনো হিংসাত্মক কার্যকলাপকে আমরা প্রশ্রয় দিই না। কিছু রাজনৈতিক দল ধর্মকে অপব্যবহার করে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চাইছেন। তাদের প্ররোচনায় পা দেবেন না। আমি মনে করি, ধর্ম মানে মানবিকতা, সহৃদয়তা, সভ্যতা ও সম্প্রীতি। সকলে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখুন - এই আমার আবেদন।'