⭕বাংলা জুড়ে দোল উৎসবের আমেজে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাতে শুরু হল তুলে বিভিন্ন অঞ্চল ও রাজবাড়ির দোল উৎসবের ঐতিহ্য কাহিনি তুলে ধরা। তেমনই আজ থাকছে, আমাদপুর চৌধুরি জমিদার বাড়ির দোল উৎসবের কাহিনি। প্রায় ৪০০ বছর পুরনো এই জমিদার বাড়ির দোলযাত্রা।
আমাদপুর চৌধুরি জমিদার বাড়ির দোল
𒅌বর্ধমানের মেমারি রেলস্টেশন থেকে মাত্র ২ কিমি দূরেই প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী গ্রাম আমাদপুর। এই গ্রামে ৪০০ বছর আগে থেকে চৌধুরি জমিদার বাড়ির আদি বসবাস। তাদের জমিদারির নিদর্শন গোটা গ্রাম জুড়েই বিস্তৃত। কোথাও বিশাল চৌধুরি পরিবারের অট্টালিকা, কোথাও আবার মা আনন্দময়ীর মন্দির। কোথাও দেখা মিলবে চারটে আটচালা শিবমন্দিরের, কোথাও আবার রয়েছে গৃহদেবতা রাধামাধবের টেরাকোটা মন্দির ও দোলমঞ্চ। প্রতি বছর এই দোলমঞ্চেই গৃহদেবতা রাধামাধবকে নিয়ে বড় করে উদযাপিত হয় দোল উৎসব।
আরও পড়ুন - 🎃বাতাসা লুট থেকে লুচির ভোগ! ৪০০ বছর ধরে বর্ণাঢ্য দোল সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারে
নারায়ণ শিলা নিয়ে প্রদক্ষিণ
𝔉দোলের আগের দিন সন্ধেবেলা অন্যদের মতোই চাঁচর উৎসব বা ন্যাড়া পোড়া পালন করে চৌধুরি জমিদার বাড়ি। তবে এই উৎসবের সময় বাড়ির নারায়ণ শিলা সেখানে উপস্থিত থাকে বলে জানা যায়। নারায়ণ শিলা নিয়ে তিনবার প্রদক্ষিণের রীতি প্রচলিত রয়েছে দিঘি পাড়ের রাসমঞ্চে। প্রদক্ষিণ শেষ হলে নারায়ণ শিলা ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় মন্দিরে।
দোলের ভোরে মঙ্গলারতি
🧸দোলের দিন ভোরে মঙ্গলারতি হয় রাধামাধবের। এরপর মন্দির থেকে দোলমঞ্চে দোলনায় করে নিয়ে আসা হয় রাধামাধবকে। দোলমঞ্চে আনার পর একটি বিশেষ অনুষ্ঠান পালিত হয়, যার নাম ‘দেবদোল’। কথিত আছে, দেবদোলে দেবতারা নিজেদের মধ্যে আবির খেলেন। এরপর পরিবারের সব সদস্য ও গ্রামবাসীরা একত্রিতভাবে রাধামাধবকে আবির দেন। রাধামাধবের সঙ্গে রং খেলা শেষ হলে আবির দেওয়া হয় এলাকার প্রবীণ মানুষদের পায়ে। প্রকৃতির মাঝে দোল খেলা শুরু করেন সবাই মিলে এর পর।
আরও পড়ুন - ✨গাছে ঢিল বাঁধলে ইচ্ছে পূরণ করেন সতী মা, দোলে ভিড় নাকি ছাপিয়ে যায় গঙ্গাসাগরকেও
দোলমঞ্চের রাধামাধবকে সাক্ষী রেখে
🅰দোলমঞ্চের রাধামাধবকে সাক্ষী রেখেই আবির খেলা চলতে থাকে। সকলের মাঝে উপস্থিত থেকে রাধামাধবও যেন সেই খেলায় যোগ দেন। দোল খেলা শেষ হলে রাধামাধবকে মন্দিরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় একই পদ্ধতিতে। এরপর তাকে বিশেষ ভোগ দেওয়ার রীতি। ভোগে থাকে ফল, লুচি ও সন্দেশ। ভোগ নিবেদন করার পর সন্ধ্যারতি করা হয় রাধামাধবের। তারপর তাঁকে শয়ন দিয়ে সমাপন করা হয় দোল উৎসবের।