𓄧 ট্রেলারেই দেখা গিয়েছে কখনও ব্রিজের উপর, তো কখনও সমুদ্রের জলে পা ডুবিয়ে বসে আছেন ১২ জন। চলছে আলোচনা, তর্ক, তর্জমা। কিন্তু সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সত্যি বলে সত্যি কিছু নেই ছবির শ্যুটিংয়ে কী কী ঘটেছিল? কেমন অভিজ্ঞতা হল শোনালেন সুহোত্র মুখোপাধ্যায়, শুনল হিন্দুস্থান টাইমস বাংলা।
সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় প্রথমবার কাজ করলেন। অভিজ্ঞতা কেমন?
সুহোত্র:♉ সৃজিতদার সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে প্রতি বাঙালি অভিনেতারই থাকে, আমারও ছিল। কিন্তু সেই সুযোগ এভাবে আসবে, এমন একটা কাস্টিংয়ের অংশ হবো বা এমন একটা গল্প যেটা পৃথিবী জুড়ে এতবার এত ভাষায় হয়েছে সেটা সৃজিতদার পরিচালনায় বাংলায় করতে পারব ভাবিনি। গল্পটাই যেহেতু একটা এক্সপেরিমেন্টাল একটা গল্প, আমাদের শ্যুটিংটাও এক্সপেরিমেন্টাল পদ্ধতিতে হয়েছে। তো তাতে কষ্টও হয়েছে, আবার নতুন অভিজ্ঞতাও হয়েছে। সব মিলিয়ে দারুণ অভিজ্ঞতা।
সুযোগটা আসে কীভাবে?
সুহোত্র: ꦗগত বছরও শুরুর দিকে এমন সময়ই সৃজিতদার একটা ফোন আসে। আমায় বলেন, 'জুন মাসে আমি একটা কাজ করছি, সেই ছবির জন্য কয়েকটা ডেট চাই তোর। তুই ফাঁকা আছিস?' ফাঁকা আছি জানাই। এভাবেই প্রাথমিক কথা শুরু হয়। তারপর ধীরে ধীরে জানতে পারি কী ছবি, কোন কাজ, আর কারা আছেন। স্ক্রিপ্ট রিডিং হয়। তো এভাবেই শুরু।
'কড়া' পরিচালকের কাছে বকাটকা শুনতে হয়েছে?
সুহোত্র:𝐆 সেটাই শুনেছিলাম যে খুব বকাঝকা করেন। কিন্তু এই সেটে সেটা হয়নি। হয়তো বড় বড়, অভিজ্ঞ শিল্পীরা ছিলেন সেই জন্যই। তবে সেটে ওঁর দারুণ দাপট ছিল। আমার সেটা বেশ ভালো লাগছিল যে উনি জানেন যে উনি কী করছেন, সেই হোল্ড ছিল ওঁর।
আপনার চরিত্রটা কেমন যদি জানান।
সুহোত্র: 🦹আমার চরিত্রের নাম আবির। এই চরিত্রটা একটু ভীতু, তাকে কেউ বকলে, জোরে বা চেঁচিয়ে কথা বললে চুপ করে যায়। দমে যায়। গল্পে প্রতিটা চরিত্রের যে ব্যাক স্টোরি আছে সেটা নয়। কিন্তু গল্প যত এগোয় তত সেটার সঙ্গে বোঝা যায় চরিত্রগুলোকে। সিনেমার শেষে বোঝা যাবে চরিত্রগুলো কোথা থেকে বিলং করে।
১১ জন শিল্পীর সঙ্গে কাজ। অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? শ্যুটিংয়ের গল্প শোনান যদি।
সুহোত্র:🐭 এঁদের অনেকের সঙ্গেই আমি এর আগে কাজ করেছি। যেমন ঋত্বিকদা (ঋত্বিক চক্রবর্তী), কাঞ্চনদা (কাঞ্চন মল্লিক), অনির্বাণদা (অনির্বাণ চক্রবর্তী), অর্জুনের (অর্জুন চক্রবর্তী) সঙ্গে এর আগে কাজ করেছি। আবার দুই কৌশিকদা (কৌশিক সেন, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়), পরমদার (পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়) সঙ্গে এই প্রথম স্ক্রিন শেয়ার করলাম। পরমদার পরিচালনায় অভিনয় করেছি, কিন্তু একসঙ্গে অভিনয় করিনি। সেটা এই প্রথম হল। অনন্যাদির (অনন্যা চট্টোপাধ্যায়) সঙ্গে আগে কাজ করেছি, একসঙ্গে সিন ছিল না আমাদের, কিন্তু কাজ করেছি। এই প্রথম একসঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করলাম। এই মানুষগুলোর সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে ছিল বহুদিনের। সেটা পূরণ হল। আর অভিজ্ঞতা বলতে যেমনটা বললাম এক্সপেরিমেন্টাল শ্যুটিং করেছি। ট্রেলারেও যেমন দেখা গিয়েছে গড়িয়াহাট ব্রিজের মাথায়, সমুদ্রের পাড়ে, গলফ কোর্সে শ্যুটিং করেছি। তো এটা যেমন একদিকে ইন্টারেস্টিং, তেমন কষ্ট হয়েছে মজাও হয়েছে।
একটু বর্ণনা শুনি।
সুহোত্র:🉐 সমুদ্রে যখন সিন হচ্ছে, সবাই জানে প্রকৃতির নিয়মে সমুদ্র সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পিছিয়ে যায়। এদিকে আমাদের সিন কোমর অবধি সবাইকে ভিজে থাকতে হবে। তো সমুদ্র যেমন পিছোচ্ছে, আমাদেরও চেয়ার হাতে নিয়ে এগিয়ে যেতে হয়েছে। ঢেউয়ে কাঞ্চনদার চেয়ার উল্টে পড়ে গেছে। চেয়ার তোলার পর দেখা যাচ্ছে কাঞ্চনদা চেয়ারের নিচে। রাহুলদাকে ঢেউ তুলে নিয়ে গেছে। কৌশিকদা আমার পাশে ছিল। একবার ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলাম আমি আর উনি এক লেভেলে আছি। পরমুহূর্তে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি চেয়ারটা বালিতে ডেবে গেছে অনেকটাই। তো এমন ছোট ছোট ঘটনা নিয়ে বেশ মজা হয়েছে। আর ১২ জন যখনই এক জায়গায় হয়েছি তখনই অনেক আড্ডা দিয়েছি। খুব মজা করে কাজ করেছি।
আপনি নিজে ‘সত্যি বলে সত্যি কিছু নেই’ কথাটায় বিশ্বাস করেন?
সুহোত্র: 🦋বিশ্বাস করি, আবার করিও না। সত্যি হয়তো একটা আছে, কিন্তু সেই সত্যটা আমি কোন লেন্সে দেখছি সেটা দেখা দরকার। আমি কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে সত্যিটা দেখছি সেই অনুযায়ী কিন্তু সত্যের ধরণ পাল্টে যায়। ধরুন একজন কাউকে দেখলাম তিনি পাউরুটি চুরি করছেন সেটা যেমন ঠিক, সেটা যেমন আমার সত্যি। তেমন আবার হতে পারে তাঁর পরিবার, সন্তানরা না খেয়ে আছে ৪ দিন, তাই বাধ্য হয়ে তিনি সেটা চুরি করলেন। সেটাও তো সত্যি।
আপনার কাছে ধ্রুব সত্য কোনটা?
সুহোত্র: প্রকৃতি। বাকি সবই এভারচেঞ্জিং।
আপনার বিষয়ে কোনও গুজব যেটা রটেছে অথচ সত্যি নয়?
সুহোত্র:♏ না, এখনও অবধি এমন কিছু আমার কাছ অবধি এসে পৌঁছায়নি।
বছরের গোড়াতেই পুরোপুরি একেন আর সত্যি বলে সত্যি কিছু নেই, আগামীতে কী কী কাজ আসছে?
সুহোত্র: 𓄧সবেই একটি সিরিজের শ্যুটিং শেষ করলাম। কিন্তু সেটার নাম ঠিক হয়নি এখনও। এছাড়া ভূতপূর্ব নামক একটা ছবিতে অভিনয় করেছি। সেটাও এই বছরের মাঝামাঝি মুক্তি পাবে।